• হোম > বাংলাদেশ > কনস্টেবলের দুই সন্তানকে ফেলে গেলেন মা

কনস্টেবলের দুই সন্তানকে ফেলে গেলেন মা

  • সোমবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০:৫১
  • ৪০৫

 কনস্টেবলের দুই সন্তানকে ফেলে গেলেন মা

লকাঠিতে আরাফ ও আয়ান নামে ১৬ মাসের জমজ দুই ছেলে সন্তানকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে ফেলে রেখে গেছেন এক পুলিশ সদস্যের স্ত্রী। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে। খবর পেয়ে শিশু দু’টিকে ঝালকাঠি থানার নারী ও শিশু ডেস্কে রাখা হয়।

রবিবার বিকেলে পুলিশ কনস্টেবল পিতা সন্তানদের ভরণপোষণ ও চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন না করায় জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে রেখে চলে যান শিশুদের মা সুমাইয়া আক্তার।

পুলিশ ও শিশুদের মা সূত্রে জানা যায়, শিশু দু’টির বাবা ইমরান হোসেন কাঁঠালিয়া থানায় পুলিশ কনস্টেবল পদে কর্মরত আছেন। সে বর্তমানে এক মাসের প্রশিক্ষণের জন্য জামালপুরে অবস্থান করছেন। তার বাড়ি বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার মালুহার গ্রামে।
২০১৯ সালের মে মাসে শিশু দু’টির মা ঝালকাঠি সদরের খাওক্ষির গ্রামের সুমাইয়া আক্তারের সাথে বিয়ে হয় কনস্টেবল ইমরান হোসেনের। দাম্পত্য কলহের জেরে চলতি বছরের মার্চ মাসে স্ত্রীকে তালাক নোটিশ পাঠান ইমরান। তালাক নোটিশ পেয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুক মামলা করেন স্ত্রী সুমাইয়া। শিশু দু’টির মা সুমাইয়ার দাবি, তালাক নোটিশ পাঠানোর আরও আগ থেকে তার এবং সন্তানদের কোনো ভরণপোষণ দিচ্ছে না ইমরান হোসেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে চায়ের দোকানী মাহফুজ মিয়া বলেন, বিকালে একজন নারী তার দুই শিশু সন্তানকে এসপি অফিসের চেক পোস্টের দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যদের সামনে রেখে যান। যাওয়ার সময় সে বলে যায়, তোমাদের সন্তান তোমাদের কাছেই থাক।

সন্ধ্যায় ঝালকাঠি সদর থানায় গিয়ে দেখা যায়, শিশু দু’টির কান্নায় থানার পারিবেশ ভারি হয়ে উঠেছে। নারী ও শিশু হেল্প ডেস্কের এক নারী কনস্টেবল শিশু দু’টিকে সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন। এ সময় শিশু দু’টির শরীরের তাপমাত্রা ছিল অনেক বেশি।

সুমাইয়া আক্তার মুঠোফোনে জানায়, গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয়ে শিশু আরাফ ও আয়ান ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি আছে। রবিবার সকালে চিকিৎসকরা শিশু দু’টির বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে বলেন। এতে প্রায় ৬ হাজার টাকার প্রয়োজন ছিল। বিষয়টি কনস্টেবল ইমরান হোসেনকে জানানো হলেও তিনি টাকা দিতে অপরগতা প্রকাশ করেন। তাই বাধ্য হয়ে শিশু দু’টিকে নিয়ে পুলিশ সুপার ফাতিহা ইয়াসমিনের সাক্ষাতের জন্য যাই। কিন্তু প্রধান ফটকের সামনে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ইমরান মিয়া ও মো. সুমন নামে দুই পুলিশ সদস্য ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়নি। তাই বাধ্য হয়ে শিশু সন্তানদের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে রেখে চলে এসেছি। ওদের লালন পালন করতে আমার কোনো আপত্তি নেই, কিন্তু খরচ চালানোর মত সংগতি আমার নেই। বাচ্চা রেখে আসার পরে সদর থানার ওসি খলিলুর রহমান আমাকে ফোন দিয়ে উল্টোপাল্টা কথা বলে, আমি থানায় না যাওয়ায় বাচ্চার বাবার ফুফাত ভাই কামরুল পুলিশের জিম্মা দিয়ে দেয়।

কনস্টেবল ইমরান হোসেন মোবাইলে জানান, প্রতি মাসে শিশু দু’টির ভরণপোষণের জন্য তিন হাজার টাকা সুমাইয়ার ব্যাংক হিসাবে পাঠিয়ে দিচ্ছি। আমি আমার সাধ্য অনুযায়ী তাদের খোঁজ খবর নেই। কিন্তু মা হয়ে সে কিভাবে সন্তানদের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে ফেলে গেল?

ঝালকাঠি সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. খলিলুর রহমান বলেন, আমরা বিষয়টি দুই পরিবারের সাথে কথা বলে মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা করছি। শিশুদের মা না আসায় তাদের দাদিকে খবর দিয়ে রাতেই শিশু দুটিকে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

সূত্র: বিডি প্রতিদিন


This page has been printed from Daily Jubokantho - https://www.jubokantho.com/112372 ,   Print Date & Time: Tuesday, 17 June 2025, 07:51:36 PM
Developed by: Dotsilicon [www.dotsilicon.com]
© 2025 SAASCO Group