• হোম > আন্তর্জাতিক > ‘আমি হানা খান, আমি প্রতিবাদ করেছি’

‘আমি হানা খান, আমি প্রতিবাদ করেছি’

  • বুধবার, ১২ জানুয়ারী ২০২২, ১০:২৩
  • ৪৬৪

হানা খান

‘চুপ করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলতে থাকবে। কিন্তু চুপ করে থাকলে চলবে না। কী হবে না ভেবে প্রতিবাদ করে যেতে হবে।’

কথাগুলো যিনি বলছিলেন, সেই হানা খান চুপ থাকেননি। ‘সুল্লি ডিলস’ অ্যাপে তার ছবি দিয়ে তাকে ‘নিলামে তোলা’ হয়েছে দেখে গত বছরের জুলাই মাসে উত্তরপ্রদেশের নয়ডায় প্রথম অভিযোগ দায়ের করেছিলেন পেশায় বিমানচালক হানা।

রবিবার দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল ‘সুল্লি ডিলস’-এর মূল চক্র ওমকারেশ্বর ঠাকুরকে মধ্যপ্রদেশ থেকে গ্রেফতার করা হয়।
হানা খান জানান, ‘‘পুলিশ পদক্ষেপ করতে বাধ্য হয়েছে কারণ, আমরা প্রতিবাদ করে গিয়েছি। ছ’মাস ধরে কেউ গ্রেফতার হয়নি। কিন্তু আমরা বিষয়টা ভুলতে দিইনি।’’

অবশ্য জুলাইয়ে নয়, বিষয়টির সূত্রপাত আরও আগে হয়েছিল বলে জানাচ্ছেন হানা। তিনি বলেন, ‘‘সেটা মে মাস। ভারতজুড়ে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। টুইটারে আমি ও আমার বন্ধুরা অক্সিজেন ও চিকিৎসার জন্য যতটা পারি সাহায্য করছিলাম। তখনই নজরে আসে লিবারাল ডজ নামে একটি ইউটিউব চ্যানেলে আমি ও আরও অনেক মুসলিম নারীকে নিলাম করা হচ্ছে। তখনও অভিযোগ করেছিলেন আমার এক বন্ধু। কিন্তু তার পরেও সুল্লি ডিলস অ্যাপ তৈরি হয়।’’

জুলাইয়ে হানার মতোই অভিযোগ করেছিলেন অনেক নারী। কিন্তু কয়েক মাস পেরিয়ে গেলেও কেউ গ্রেফতার হয়নি।

তার কথায়, ‘‘আমরা একাধিক বার পুলিশকে জিজ্ঞাসা করেছি। কোনও লাভ হয়নি।’’

‘সুল্লি ডিলস’-এর অনুকরণে চলতি বছরে সামনে আসে ‘বুল্লি বাই’ অ্যাপ। হানা বলছেন, ‘‘প্রথমে রাগ হয়েছিল। এ বার আবার ওই ঘটনা দেখে প্রচণ্ড হতাশ হয়ে পড়ি। এত হতাশ আমি জীবনে হইনি। মনে হচ্ছিল, তা হলে কি এমন আক্রমণ চলতেই থাকবে?’’

কেবল নারী নন, মুসলিম বলেই এমন আক্রমণ বলে মনে করেন হানা। তার কথায়, ‘‘যারা গ্রেফতার হয়েছে তাদের মধ্যে এক জন তরুণীও রয়েছে। কেবল নারী বলে আক্রমণ করা হলে কি সেটা হত?’’ তাদের ভয় দেখিয়ে চুপ করিয়ে দেওয়ার জন্যই এমনটা করা হয়েছে বলে জানাচ্ছেন হানা।

তিনি জানান, ‘‘আমি প্রতিবাদ করেছি। কিন্তু যে অজস্র মুসলিম নারীর ছবি দিয়ে ওই কদর্য আক্রমণ হচ্ছিল, তাদের মধ্যে অনেকে সেই সাহস পাননি, অনেকে টুইটার প্রোফাইল বন্ধ করে দিয়েছেন। আক্রমণকারীরা সেটাই চায়।’’

‘বুল্লি বাই’ অ্যাপ নিয়ে অভিযোগ হওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই মুম্বাই পুলিশ মূল চক্রকারী নীরজ বিষ্ণোই-সহ চার জনকে গ্রেফতার পরে। তার পরে দিল্লি পুলিশ গ্রেফতার করে ‘সুল্লি ডিলস’-এর মূল হোতাকে।

হানার প্রশ্ন, ‘‘দেখাই তো যাচ্ছে, পুলিশ তৎপর হলে এত দ্রুত অপরাধীদের ধরা যায়। তা হলে জুলাই থেকে এত দিন তা হয়নি কেন?’’

এখন ওই অপরাধীদের সমর্থনে সহানুভূতির হাওয়া তোলার চেষ্টা হচ্ছে বলেও অভিযোগ হানার। তার ক্ষোভ, ‘‘অনেকে বলছেন, ওদের কম বয়স ইত্যাদি। কিন্তু যে ভাবে আক্রমণ, নির্যাতন করা হয়েছে তাতে এর কোনো জায়গা নেই। তা ছাড়া প্রত্যেকেই প্রাপ্তবয়স্ক।’’

সূত্র: আনন্দবাজার।


This page has been printed from Daily Jubokantho - https://www.jubokantho.com/116000 ,   Print Date & Time: Tuesday, 17 June 2025, 08:11:24 PM
Developed by: Dotsilicon [www.dotsilicon.com]
© 2025 SAASCO Group