• হোম > আইন-অপরাধ > ভাড়ায় জেলখাটার চাঞ্চল্যকর কাহিনি

ভাড়ায় জেলখাটার চাঞ্চল্যকর কাহিনি

  • সোমবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২২, ০৮:৪৪
  • ৩৮৫

 প্রতীকী ছবি

মাসিক ৫ হাজার টাকা ভাড়ায় জেল খাটছেন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি নকল সোহাগ। তার প্রকৃত নাম মো. হোসেন। বাবা মৃত হাসান উদ্দীন। অন্যদিকে জেলের বাইরে ভালোই চলছিল আসল মো. সোহাগের (৩৪) দিনকাল। একেবারেই নির্ভার হতে দেশ ছাড়ার পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি। সংগ্রহ করেছিলেন আমিরাতের ভিসা। তবে এর আগে বাবার নাম পাল্টে তিনি সংগ্রহ করেছিলেন জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট। কিন্তু বাদ সেধেছে করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ। ভ-ুল করে দিয়েছে আসল সোহাগের সব পরিকল্পনা। রাজধানীর সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গতকাল টিকা দিতে গিয়েই র‌্যাব-১০ এর কাছে পাকড়াও হয়েছেন তিনি।

২০১০ সালের ২৬ নভেম্বর কদমতলী আউটার সার্কুলার রোডে নোয়াখালীপট্টির নান্নু জেনারেল স্টোরের সামনে বেলা সোয়া ২টার দিকে টিটুকে গুলি করে খুন করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় সোহাগ ওরফে বড় সোহাগ (৩৪), মামুন (৩৩), সোহাগ ওরফে ছোট সোহাগসহ (৩০) অজ্ঞাতনামা আরও তিন-চারজনকে আসামি করে মামলা হয়। কদমতলী থানার মামলা নম্বর-৪৯। তারিখ ২৬.১১.২০১০।

গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-১০ অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মাহফুজুর রহমান বলেন, কদমতলী এলাকায় ২০১০ সালের ২৬ নভেম্বর হুমায়ুন কবীর ওরফে টিটু হত্যাকান্ডের যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি এই সোহাগ। একই বছরের ২২ ডিসেম্বর গ্রেফতার হয়ে ২০১৪ সালের ১৬ মে জামিনে মুক্তি লাভ করার পর থেকেই তিনি পলাতক ছিলেন। ২০১৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর মামলার ১ নম্বর আসামি সোহাগের অনুপস্থিতিতে আদালত তার যাবজ্জীবন সাজার রায় ঘোষণা করে। পরে পরিকল্পনা অনুযায়ী সোহাগ তারই ফুফাতো ভাই মো. হোসেনকে নকল সোহাগ সাজিয়ে ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি আদালতে আত্মসমর্পণ করান। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে নকল সোহাগকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।
র‌্যাব-১০ এর সিও বলেন, পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী মাদকাসক্ত হোসেন ওরফে নকল সোহাগকে মাসিক ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে জেলহাজতে পাঠান সোহাগ। শর্ত ছিল দুই-তিন মাসের মধ্যেই তাকে জেল থেকে বের করে আনা হবে। ছেলেবেলা থেকেই হোসেন মাদকাসক্ত। তার বিশেষ সখ্যও ছিল সোহাগের সঙ্গে। ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময়ে একটি গণমাধ্যমে টিটু হত্যা মামলায় একজনের পরিবর্তে অন্যজন জেল খাটছে এমন প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিষয়টি আদালতের নজরে আসে। আদালত কারা কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন চাইলে হাজতে থাকা আসামি নকল সোহাগ প্রমাণিত হয়। এরপর থেকেই র‌্যাব আসল সোহাগকে খুঁজতে থাকে। এরই মধ্যে বিশেষ দায়রা আদালত ও দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ প্রকৃত আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।
শিগগিরই হয়তো সোহাগ দেশত্যাগ করে ফেলত জানিয়ে র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রেফতার এই ব্যক্তি অত্যন্ত ধূর্ত। বাবার নাম গিয়াস উদ্দীন পাল্টে শাহ আলম ফকির নামে পাসপোর্ট সংগ্রহ করেন। এই পাসপোর্টের বিপরীতে এরই মধ্যে তিনি আরব আমিরাতের ভিসা সংগ্রহ করে ফেলেছিলেন। কাদের সহায়তায় তিনি এরকম ভয়ংকর কাজটি করেছেন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি বলেছেন, তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ২টি হত্যা, ২টি অস্ত্র ও ৬টি মাদক মামলাসহ মোট ১০টি মামলা রয়েছে।

সূত্রঃ বিডি প্রতিদিন


This page has been printed from Daily Jubokantho - https://www.jubokantho.com/117291 ,   Print Date & Time: Tuesday, 17 June 2025, 08:02:49 PM
Developed by: Dotsilicon [www.dotsilicon.com]
© 2025 SAASCO Group