• হোম > আইন-অপরাধ | জাতীয় > যেখানে হাত দিচ্ছি সেখানেই অনিয়ম পাচ্ছি : সফিকুজ্জামান

যেখানে হাত দিচ্ছি সেখানেই অনিয়ম পাচ্ছি : সফিকুজ্জামান

  • বৃহস্পতিবার, ১৯ মে ২০২২, ১৮:৩৫
  • ৩৩৩

---

যেখানে হাত দিচ্ছেন সেখানেই অনিয়ম পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচ এম সফিকুজ্জামান।  তিনি বলেন, তেল, পেঁয়াজ ও পোশাকসহ যেখানেই হাত দিয়েছি সেখানেই অনিয়ম পাচ্ছি।

বৃহস্পতিবার (১৯ মে) রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক্স রিপোর্টার্স ফোরাম (আইআরএফের) এক সেমিনারে এসব কথা জানান সরকারের এই অতিরিক্ত সচিব।

জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর কাদের শাহরিয়ারের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন ইআরএফের সভাপতি শিরীন শারমিন ও সাধারণ সম্পাদক এসএম রাশেদুল ইসলাম।

‘অর্থনৈতিক সাংবাদিকদের অংশগ্রহণে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯’ বিষয়ক সেমিনারটি জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও ইআরএফ যৌথভাবে আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানে ভোক্তা অধিদপ্তরের কার্যক্রম ও আইন নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রজবী নাহার রজনী।

জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ভোক্তারা প্রতারিত হতে হতে এমন পর্যায়ে চলে গেছে, এখন যে তাদের অধিকার খর্ব হচ্ছে, সেটাই আর বুঝতে পারেন না। এসময় তিনি ভোক্তার স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হওয়ার বিভিন্ন উদাহরণ তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, চিকিৎসকদের চেম্বারের সামনে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা দাঁড়িয়ে থাকছে। তা থেকে ধারণা করা যায় চিকিৎসকরা কোম্পানির সুপারিশে ওষুধ লিখছেন। আবার ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা রোগীর প্রেসক্রিপশনের ছবি তুলে নিচ্ছেন। এতে রোগীর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।

ইংরেজি মাধ্যমে কোনো কোনো স্কুলে ভর্তির সময়ই কয়েক মাসের বেতন আগাম নিয়ে নেওয়া হচ্ছে। বই, খাতা, কলম, পোশাক স্কুল থেকে বেশি দামে কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে।

এএইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, কক্সবাজার পর্যটন কেন্দ্রে ছবি তোলা, বাইক চালানো, ঘোড়াসহ বিভিন্ন লোকেরা পর্যটকদের চারপাশে সারাক্ষণ ঘুরঘুর করছে। পর্যটকরা নিজেদের মতো সময় কাটাতে পারছেন না। আর কোনো সেবা নিলে উচ্চহারে মূল্য দিতে হচ্ছে।

মানুষ ওয়াসা, ডেসা, তিতাস থেকেও যথাযথ সেবা পাচ্ছেন না। পানির মান ভালো না। গ্যাসের চাপ কম থাকে। বিদ্যুতে লোডশেডিং হচ্ছে। বিমান সময়মতো ছাড়ছে না। এক কথায় যেখানেই হাত দিচ্ছি, সেখানেই অনিয়ম পাচ্ছি।

এসময় জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ওয়াসা, ডেসা, ডেসকো, তিতাসের সেবা বিষয়ে অধিদপ্তরের কার্যক্রম পরিচালনার ইঙ্গিত দেন।

তিনি বলেন, ভোক্তা অধিদপ্তরের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা- সঠিক তথ্যের অভাব। এই সংস্থার তথ্যের বৈধ উৎস নেই। ভোক্তা বা ব্যক্তিগত উৎস থেকে যে তথ্য পাওয়া যায়, সেগুলোর সঠিকতা যাচাই করারও সুযোগ নেই। এজন্য ভোক্তা অধিদপ্তর সব গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে যৌথভাবে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বেশি আলোচিত ইস্যু ভোজ্যতেলের সংকট প্রসঙ্গে সফিকুজ্জামান বলেন, তথ্য অনুযায়ী তেলের সংকট হওয়ার কথা নয়, কিন্তু হয়েছে। কোম্পানিগুলো উৎপাদন কমিয়েছে। ব্যবসায়ীরা সরবরাহ আদেশ ধরে রাখছে। এক কথায় বাজারে এক ধরনের মনোপলি বা সিন্ডিকেট হয়ে গেছে। এসব জেনে বুঝেও কিছু করার থাকছে না। কারণ এক বা দুটি বড় কোম্পানি কোনো অজুহাতে উৎপাদন বন্ধ রাখলে যে সংকট হয়েছে, তার চেয়ে বড় ধরনের সংকটের আশংকা রয়েছে। সরকার চায় পণ্যের সরবরাহ ঠিক রাখতে।

অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) মনজুর মোহাম্মাদ শাহরিয়ার বলেন, উন্নত দেশে উন্নয়ন সাবলীল করতে ভোক্তা অধিকার আইনকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। অধিদপ্তরকে জনবলসহ অন্যান্য সহায়তা দিয়ে শক্তিশালী করতে হবে। ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোকেও শক্তিশালী করা দরকার।

তিনি বলেন, প্রতিটি জায়গায় অনিয়ম রয়েছে। নামকরা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও প্রচুর অনিয়ম রয়েছে। ভোক্তা অধিদপ্তর ঠিকমতো কাজ করতে পারলে এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে জরিমানা বা শাস্তি হবে না। তিনি ভোক্তা অধিকার রক্ষায় গণমাধ্যমের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।

অনুষ্ঠানে আইআরএফের সহসভাপতি শফিকুল আলম বলেন, দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির ফলে ব্যবসার ধরণ পাল্টাচ্ছে। আবার ভোক্তাদের ক্রয় ক্ষমতাও বেড়েছে। ফলে ভোক্তা অধিকার আইনটি সংশোধন করতে হবে। আইন ভঙ্গের শাস্তি আরও কঠোর করতে হবে। ভোক্তা অধিদপ্তরের গবেষণা ও গোয়েন্দা কার্যক্রম বাড়ানোর সুপারিশ করেন তিনি।


This page has been printed from Daily Jubokantho - https://www.jubokantho.com/118126 ,   Print Date & Time: Wednesday, 18 June 2025, 12:05:21 AM
Developed by: Dotsilicon [www.dotsilicon.com]
© 2025 SAASCO Group