• হোম > বাংলাদেশ > সিন্ডিকেটের কবলে অনিশ্চয়তায় দেশের তৃতীয় চা অঞ্চলের ভবিষ্যৎ

সিন্ডিকেটের কবলে অনিশ্চয়তায় দেশের তৃতীয় চা অঞ্চলের ভবিষ্যৎ

  • শনিবার, ৪ জুন ২০২২, ১২:৪১
  • ৪৩৪

 সিন্ডিকেটের কবলে অনিশ্চয়তায় দেশের তৃতীয় চা অঞ্চলের ভবিষ্যৎ

সিদ্ধান্ত হয় কিন্তু কার্যকর হয় না। চা প্রক্রিয়াজাত কারখানা মালিকদের সিন্ডিকেট, সদস্যদের কৌশলগত কারসাজি ও বাণিজ্যের কারণে চাষিরা মূল্য বঞ্চনা ও বিড়ম্বনার শিকার হওয়ার পাশাপাশি অকশন মার্কেট ও সরকারি কারখানা স্থাপনের কার্যক্রম আটকে যাওয়ায় প্রতি বছর চাষিরা লোকসানের মুখে পড়ছে। একই সঙ্গে এ অঞ্চলের চা’র ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। প্রতি বছর প্রশাসন চা পাতার মূল্য নির্ধারণ করলেও নানা অজুহাতে নির্ধারিত মূল্যে চা পাতা ক্রয় করছে না মালিকরা। কয়েকবছর আগে চাষিদের চা পাতার ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতের জন্য পঞ্চগড়ে সরকারিভাবে একটি চা কারখানা করার উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু চা বোর্ড কর্তৃপক্ষ অজ্ঞাত কারণে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে জানিয়ে দিয়েছে এখানে সরকারি চা কারখানার প্রয়োজন নেই। এ ছাড়া এখানে চায়ের অকশন মার্কেট করার জন্য সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে নির্দেশনা দেয়া হলেও এখন পর্যন্ত মার্কেটের কার্যক্রম শুরু হয়নি। জানা গেছে, বছরের মে, জুন ও জুলাই মাস চা পাতার ভরা মৌসুম। এ সময়ে চা প্রক্রিয়াজাত কারখানা মালিকের সিন্ডিকেট কারসাজিতে সক্রিয় হয়ে ওঠে। এক সময় কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রতি কেজি কাঁচা চা পাতা ২০-২২ টাকা দরে ক্রয় করলেও এখন তারা ১২-১৩ টাকা দরে ক্রয় করছেন।

এ ছাড়া কাঁচা চা পাতার বিভিন্ন সমস্যা দেখিয়ে ওজন থেকে শতকরা ২০-২৫ ভাগ কর্তন করে রাখছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চা পাতা দিতে না পারলে তারা চাষিদেরকে ফিরিয়ে দিচ্ছে। তবে কেজিতে ১ টাকা কমে দিলে দালালদের মাধ্যমে কারখানা কর্তৃপক্ষ ঠিকই যে কোনো সময় পাতা নিচ্ছে। চা চাষি অধিকার বাস্তবায়ন কমিটির নেতা কামরুজ্জামান শেখ মিলন ও সায়েদ আলী বলেন, কারখানা কর্তৃপক্ষ চাষিদের কাছ থেকে চা পাতা নিতে না চাইলেও ফড়িয়াদের কাছ থেকেই ঠিকই ক্রয় করছে।
তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগর ইউনিয়নের বাংলাচন্ডি এলাকার চা চাষি মাহবুব আলম বলেন, ১ হাজার ৪৮০ কেজি কাঁচা চা পাতা বাকিতে নিয়ে, নর্থ বেঙ্গল সেন্ট্রাল টি ইন্ডাস্ট্রিজ কর্তৃপক্ষ ১৮ শতাংশ কর্তন করে তাকে প্রতি কেজি ১৩ টাকা ৫০ পয়সা দরে ১ হাজার ২১৩ কেজির টাকা পরিশোধ করেছে। এক কেজি কাঁচা চা পাতার উৎপাদন খরচই পড়ে যায় ১৫-১৬ টাকা।
করতোয়া চা কারখানার প্রতিনিধি শাহ আলম বলেন, সিন্ডিকেটের অভিযোগটি সঠিক নয়। গুণগতমান সম্পন্ন চা পাতা না দেয়ার জন্য নিলাম বাজারে চায়ের দরপতন হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের সহ-সভাপতি চা চাষি আব্দুল লতিফ তারিন বলেন, চা কারখানা মালিকরা সিন্ডিকেট করে কাঁচা চা পাতা ক্রয় করে চাষিদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। আর রাতের আঁধারে উৎপাদিত উন্নতমানের চা ২০০ ও ২৫০ টাকা কেজি দরে ট্রাকে করে ব্যবসায়ীদের কাছে সরবরাহ করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। অকশন মার্কেটে সরবরাহ করছে নিম্নমানের চা। যাতে এ অঞ্চলের সুনাম নষ্ট হচ্ছে।
পঞ্চগড়-১ আসনের সংসদ সদস্য মজাহারুল হক প্রধান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চা চাষিদের অর্থনৈতিক উন্নতি ও সুবিধার্তে পঞ্চগড়ে সরকারি চা কারখানা করার জন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ দিয়েছিলেন। তিনি এখানে অকশন মার্কেট (নিলাম বাজার) করার জন্যও নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু কারখানা সংশ্লিষ্ট সিন্ডিকেট ও দেশের বড় বড় ব্যবসায়ীদের তৎপরতায় দু’টিই আটকে গেছে।
চা পাতা মূল্য নির্ধারণ কমিটির সভাপতি ও পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, সকল পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতি কেজি কাঁচা চা পাতার মূল্য ১৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। কারখানাগুলোর সা

মনে মূল্য তালিকা টাঙ্গিয়ে দেয়া হয়েছে। ভেজা ও পানিযুক্ত চা পাতা থাকলে শতকরা ১০ ভাগ মূল্য কর্তন করা হবে। এ সিদ্ধান্ত মেনে চলার জন্য সকলকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

সূত্রঃমানবজমিন


This page has been printed from Daily Jubokantho - https://www.jubokantho.com/119126 ,   Print Date & Time: Saturday, 2 August 2025, 01:39:23 PM
Developed by: Dotsilicon [www.dotsilicon.com]
© 2025 SAASCO Group