• হোম > বাংলাদেশ > ইনজেকশন নিতে এসে নার্সের ‘স্পর্শকাতর স্থানে’ হাত!

ইনজেকশন নিতে এসে নার্সের ‘স্পর্শকাতর স্থানে’ হাত!

  • মঙ্গলবার, ৭ জুন ২০২২, ১৫:৫২
  • ৫৮৫

সংগ্রহীত

অভিযুক্ত ছাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী এবং একটি আবাসিক হলের বাসিন্দা। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী নার্স।

এদিকে এ ঘটনায় বিচার দাবি করে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীরা। তারা প্রায় তিন ঘণ্টা চিকিৎসাকেন্দ্র তালাবদ্ধ করে রাখেন। তারা ওই শিক্ষার্থীর বহিষ্কার দাবি করেন।

অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী নার্স লিখেন, শনিবার সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের ওই শিক্ষার্থী ইনজেকশন দেয়ার সময় আমার শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়। প্রথমে এটি অসাবধানতাবশত হয়েছে বলে মনে করি। কিন্তু এরপর সে আমার কক্ষে এসে আমার শরীরে হাত দেয়। এসময় আমি চিৎকার করলে আমার সহকর্মীরা ডিউটি রুমে এসে উপস্থিত হয়। তখন ওই ছাত্র সরে যায়।

এ ঘটনায় তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন ওই নার্স। বলেন, ‘আমার ওপর সংঘটিত এ যৌন হয়রানির সুষ্ঠু বিচার কামনা করছি।’

এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি ইনজেকশন নেয়ার সময় নার্সের গায়ে হাত দেই। আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগটি সত্য।’

অভিযুক্তের বন্ধু ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, সে মানসিকভাবে অসুস্থ। তার ভাগ্নে সবুজ আহমেদ জানান, ‘মামার সাথে পরিবারের সম্পর্ক ভালো না। তাকে ফোনে পাওয়া যায় না। মাঝে মাঝে ফোন দিয়ে পরিবারের সাথে কথা বলতো। সে ঈদেও বাড়িতে আসেনি।’

ওই শিক্ষার্থীর রুমমেট জানান, ‘সে সারাদিন চুপচাপ থাকে। কোনো কথা বলে না। কোনো দরকার হলে বাইরে যায় আবার চলে আসে। তার আচার-আচরণ সব সময় অস্বাভাবিক। তার ব্যাপারে হলের সবাই জানতো।’

এ ব্যাপারে প্রাণ রসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. মাহবুবুল মোর্শেদ বলেন, ‘ছেলেটি মানসিকভাবে অসুস্থ সেটা আমরা জানি। আমরা তার পরিবারকে বিষয়টি জানিয়েছি। পরিবারের লোকজন ক্যাম্পাসে এসেছে। তাদের সাথে আমরা বাড়িতে পাঠিয়ে দেব এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা করব।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, ‘এ ঘটনার লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটা দ্রুতই বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন সেলে পাঠানো হবে। সেল ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।’

বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রের প্রধান কর্মকর্তা শামছুর রহমান বলেন, আমরা চিকিৎসাকেন্দ্র থেকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দিয়েছি। আশা করি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

এদিকে, এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে চিকিৎসাকেন্দ্রে তালা ঝুলিয়ে অবরোধ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী ইউনিয়ন ও সমিতির সদস্যরা। ফলে প্রায় আড়াই ঘণ্টা চিকিৎসাকেন্দ্রের সেবাদান কার্যক্রম বন্ধ ছিল। বেলা ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের আশ্বাসে ও রোগীদের সেবা নেয়ার কথা বিবেচনা করে তালা খুলে দেয় তারা।

এ বিষয়ে কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম হাওলাদার বলেন, ‘আমাদের সহকর্মী সেবা দানরত অবস্থায় এক শিক্ষার্থীর দ্বারা নিপীড়নের শিকার হয়। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। সেই সাথে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তের শাস্তি দাবি করছি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হলে আমরা আন্দোলনে যাব।’


This page has been printed from Daily Jubokantho - https://www.jubokantho.com/119412 ,   Print Date & Time: Tuesday, 15 July 2025, 08:11:54 AM
Developed by: Dotsilicon [www.dotsilicon.com]
© 2025 SAASCO Group