• হোম > জাতীয় > ‘২০ তারিখে বুঝিয়ে দেয়া হবে পদ্মা সেতু’

‘২০ তারিখে বুঝিয়ে দেয়া হবে পদ্মা সেতু’

  • বৃহস্পতিবার, ৯ জুন ২০২২, ১১:৩৯
  • ৩৬৫

 সংগ্রহীত

গল্পটা বহু দিনের। পুরনো স্মৃতির মলাটের ভাঁজে জমে আছে ঝড়, বৃষ্টি, কুয়াশা ভেদ করে খরস্রোতা এক নদীর সঙ্গে দিনযাপনের ইতিকথা। পদ্মা পাড়ি দিতেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা। লঞ্চ কিংবা ফেরির জন্য অপেক্ষার সময়টাতেও কত মানুষ কত কি যে হারিয়েছে সে গল্পও গিলে ফেলেছে পদ্মা। এবার দিন বদলের পালা। তাইতো আর তর সইছে না।

নৌকার এক যাত্রী বলেন, দেখলাম ব্রিজ চাইয়া চাইয়া, (চেয়ে চেয়ে)। শুনেছি ২৫ তারিখ থেকে ব্রিজ দিয়ে যাওয়া-আসা করা যাবে। ভালোই লাগছে।

দৃষ্টিসীমা যত দূরে যায় ততটুকুই যেন স্বপ্নের বুনন। স্বাবলম্বীতার এ স্মারক পথ দেখাচ্ছে আত্ম নির্ভরশীলতার।

পদ্মা বহুমুখী সেতুর প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম সময় সংবাদকে বলেন, আমাদের টার্গেট ২০ তারিখের মধ্যে বুঝিয়ে দেব ব্রিজটি। আমাদের কাজ হলো ব্রিজটাকে যানবাহন চলাচলের উপযোগী করা। বিদ্যুতে কাজ শেষ হয়েছে। ফেস বাই ফেস লাইট জ্বালানো হচ্ছে।

শেষ বেলায় ইস্পাতের কাঠামোর উপর যেন বিছানো মায়াময় মসৃন চাদর। চলছে নামফলক আর সাজসজ্জার কাজ। ২০ জুনের মধ্যে প্রকল্প কর্তৃপক্ষ কাজ বুঝিয়ে দেয়ার কথা থাকলেও তার আগেই শেষ করার কথা জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক।

৬.১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘের এ সেতু কাজ শুরু হয় ৭ ডিসেম্বর ২০১৪। ২৫ জুন খুলছে স্বপ্নদ্বার। পরদিনই সাধারণ মানুষ পদ্মা পাড়ি দিবে স্বপ্ন সেতু দিয়ে।

এদিকে সেতু বিভাগের সচিব মঞ্জুর হোসেন গতকাল জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করবেন। তবে ওই দিনই পদ্মা সেতু সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে না। বুধবার (৮ জুন) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে সেতু বিভাগ আয়োজিত পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষ্যে মতবিনিময় সভায় সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন শেষে চলে যাওয়ার পর প্রজ্ঞাপন দিয়ে জানানো হবে যান চলাচলের উন্মুক্তের সময়, সেটা হতে পারে পরদিন সকাল ৬টা থেকে।

আরও পড়ুন: প্রকৌশল জগতের এক বিস্ময় পদ্মা সেতু: শেখ হাসিনা

এ সময় তিনি আরও বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষ্যে দুটি অনুষ্ঠান হবে। একটি মাওয়া প্রান্তে অন্যটি জাজিরা প্রান্তে। মাওয়া প্রান্তে হবে সুধী সমাবেশ। যেখানে শুধু প্রধানমন্ত্রী কথা বলবেন। তারপর মাওয়া প্রান্তে উদ্বোধনী ফলক ও ম্যুরাল উদ্বোধন করবেন তিনি।

সচিব জানান, সবকিছু ঠিক থাকলে পদ্মা সেতু পার হয়ে বেলা ১১টায় তিনি জাজিরা প্রান্তের সমাবেশে যোগ দেবেন। ওপাশেও একটি উদ্বোধনী ফলক ও ম্যুরাল থাকবে সেটিও উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। জাজিরা প্রান্তে আয়োজিত সমাবেশে ১০ লাখের বেশি মানুষের সমাগম হবে বলে আশা করা হচ্ছে। অনুষ্ঠানগুলো এক সঙ্গে ৮ বিভাগ, ৬৪ জেলায় সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।
প্রকল্প সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত তথ্য:

প্রকল্পের নাম: পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প, প্রকল্পের অবস্থান:
রাজধানী ঢাকা থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে। দেশের মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর ও মাদারীপুর জেলায় প্রকল্পের অবস্থান। সেতুর উত্তর প্রান্তে মাওয়া, লৌহজং, মুন্সীগঞ্জ এবং দক্ষিণ প্রান্তে জাজিরা, শরীয়তপুর, শিবচর ও মাদারীপুর।

যেভাবে কাজ শুরু হয়:

১৯৯৮ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাই শুরু হয়। এরপর ২০০১ সালে জাপানিদের সহায়তায় সম্ভাব্যতা যাচাই হয়। ২০০৪ সালের জুলাই মাসে জাপানের আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা জাইকার সুপারিশ মেনে মাওয়া-জাজিরার মধ্যে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্মা সেতুর নকশা প্রণয়নে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান চূড়ান্ত করে। মহাজোট সরকার শপথ নিয়েই তাদের নিয়োগ দেয়। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার সেতু করার চূড়ান্ত নকশা করা হয়।


This page has been printed from Daily Jubokantho - https://www.jubokantho.com/119499 ,   Print Date & Time: Tuesday, 17 June 2025, 10:40:29 AM
Developed by: Dotsilicon [www.dotsilicon.com]
© 2025 SAASCO Group