• হোম > জাতীয় > পদ্মা সেতু নিয়ে কল্পিত ষড়যন্ত্রের কাহিনী বেরিয়ে এলো

পদ্মা সেতু নিয়ে কল্পিত ষড়যন্ত্রের কাহিনী বেরিয়ে এলো

  • বৃহস্পতিবার, ১৬ জুন ২০২২, ১০:৫৯
  • ৪২৯

 পদ্মা সেতু

দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে বাঙালি জাতির স্বপ্নের পদ্মা সেতু এখন পরিপূর্ণ রূপ নিয়েছে। অপেক্ষা কেবল উদ্বোধনের। তবে বহুল প্রতীক্ষিত এ সেতু যাতে না হয় সে জন্য শুরু থেকেই নানা ষড়যন্ত্র হয়। দিনের পর দিন পদ্মা সেতুর কল্পিত দুর্নীতি নিয়ে মনগড়া গুজব ছড়ানো হয়। তখন অস্তিত্বহীন হেলাল নামে এক ব্যক্তির ভুয়া চিঠির ভিত্তিতে পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের প্রথম অভিযোগ আনে বিশ্ব ব্যাংক। এরপর এসএনসি লাভালিন কর্মকর্তা রমেশ সাহার কথিত ডায়েরির ঘুষ ষড়যন্ত্রের তথ্য পাওয়ার গল্প সাজায় তারা। অথচ এই ডায়েরির কোনো অস্থিত্বই মেলেনি। আর হেলালের চিঠিটিও জাল।

বেরিয়ে এলো পদ্মা সেতু নিয়ে কল্পিত ষড়যন্ত্রের কাহিনী

পদ্মা সেতুর কল্পিত দুর্নীতির তদন্তে ২০১২ সালে দুই দফা ঢাকায় আসেন বিশ্ব ব্যাংকের তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল। বৈঠক করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সঙ্গে। বৈঠকে হেলাল নামে এক ব্যক্তির চিঠি এবং এসএনসি লাভালিন কর্মকর্তা রমেশ সাহার ডায়েরি নিয়ে আলেচনা হয়। যার ভিত্তিতেই কল্পিত দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনেছিল বিশ্বব্যাংক।

কি ছিল হেলালের চিঠিতে, রমেশের রহস্যজনক ডায়রিতেই বা কি লেখা ছিল?

পদ্মা সেতু প্রকল্পে কথিত দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের প্রথম অভিযোগ করেন বাংলাদেশি নাগরিক হেলাল। তিনি চায়না রেলওয়ে ফিফটি কোম্পানির বাংলাদেশি এজেন্ট। প্রতিষ্ঠানটির প্যাড ব্যবহার করে হেলাল বিশ্বব্যাংককে জানান, তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেনের প্রতিষ্ঠান সাকো ইন্টারন্যাশনালকে লোকাল এজেন্ট নিয়োগ দিলে তারা চায়না কোম্পানিকে কাজ পাইয়ে দেবে।

চিঠিটি দুদকের কাছে পাঠায় বিশ্বব্যাংক। দুদকের অনুসন্ধানে উঠে আসে চায়না রেলওয়ে ফিফটি কোম্পানি এ ধরনের কোনো চিঠি দেয়নি বিশ্বব্যাংককে। ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে চিঠিটি সামনে আনা হয়। এরপর থেকেই পলাতক হেলাল।

দুর্নীতি দমন কমিশনের সাবেক কমিশনার সাহাবুদ্দিন চুপ্পু বলেন, আমরা তদন্তকালে তাদের জিজ্ঞেস করেছি। তারা বললো না, বাংলাদেশ থেকে কেউ আমাদের এ রকম পত্রও পাঠায়নি এবং রিকোয়েস্ট করেনি তাদের সাইলেন্ট এজেন্ট হিসেবে নিয়োগের জন্য। একটা কম্পিউটারে কম্পোজ করা হয়েছে ঠিক ওই প্রতিষ্ঠানের আদলে এবং ওখানে সিগনেচারটাকে সুপার ইম্পোজ করে বসানো হয়েছে।

সে সময় কানাডীয় কোম্পানি এসএনসি লাভালিন কর্মকর্তা রমেশ সাহার একটি ডায়েরি আসে আলোচনায়।বিশ্বব্যাংক দাবি করে, রমেশ সাহার নোটে পরামর্শক নিয়োগ নিয়ে ঘুষ দেয়ার ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ আছে। নামের অদ্যাক্ষর সংবলিত ১০ জনের একটি তালিকা কানাডা পুলিশ উদ্ধার করে বলে দাবি করা হয়।

তৎকালীন দুদকের এ কমিশনার জানান, দুবার কানাডায় গিয়েও এমন ডায়েরির কোনো অস্থিত্ব মেলেনি। তারাও দুদককে দেননি।

সাহাবুদ্দিন চুপ্পু বলেন, একবার বলে ডায়েরি, একবার বলে নোটপ্যাড, আরেকবার বলে কাগজ এটা পাওয়া গেছে তার মধ্যে বাংলাদেশের কাকে কত পার্সেন্টেজ টাকা দেয়ার কথা লেখা আছে। তো আমরা কিন্তু সেটার জন্য বারবার করে কানাডাতে চিঠি পাঠিয়েছি। কিন্তু সেটার অস্তিত্ব না থাকায় আমাদের কাছে দিতে পারেনি।

দেশি-বিদেশি চাপ উপেক্ষা করে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করে দুদক। তখনও একটি মহল সমালোচনায় লিপ্ত হয়। এরপর রায় আসে কানাডার আদালত থেকে। যেখানে বলা হয় দুর্নীতির অভিযোগ গালগল্প ছাড়া কিছুই নয়।


This page has been printed from Daily Jubokantho - https://www.jubokantho.com/119888 ,   Print Date & Time: Tuesday, 17 June 2025, 05:07:32 AM
Developed by: Dotsilicon [www.dotsilicon.com]
© 2025 SAASCO Group