• হোম > খুলনা | বাংলাদেশ > নড়াইলে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় মোবাইল ফোন নিষিদ্ধ

নড়াইলে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় মোবাইল ফোন নিষিদ্ধ

  • শনিবার, ২ জুলাই ২০২২, ১০:২৬
  • ৪৫৪

প্রতীকী ছবিধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের কথিত অভিযোগ এনে নড়াইলে এক কলেজ অধ্যক্ষের গলায় জুতার মালা পরানোর ঘটনার পর নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। এই জেলার মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের সব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একইসঙ্গে আসন্ন ঈদুল আজহার ‍ছুটির পর প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র ও অভিভাবকদের নিয়ে সমাবেশ করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সম্প্রতি জেলা শিক্ষা অফিসার এস এম ছায়েদুর রহমান মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের লিখিত এই নির্দেশনা দেন।

শুক্রবার (১ জুলাই) জানতে চাইলে বাংলা ট্রিবিউনকে এস এম ছায়েদুর রহমান বলেন, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা যাতে মোবাইল ফোন আনতে না পারে, সে জন্য এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ঈদুল আজহার পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অভিভাবকদের নিয়ে সমাবেশ করা হবে। কর্মকর্তাদের এলাকা ভাগ করে দেওয়া হয়েছে, তারা নির্দেশনা বাস্তবায়নে কাজ করবেন।’

প্রসঙ্গত, গত ১৮ জুন নড়াইল সদরের মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র রাহুল দেব ভারতের বিতর্কিত রাজনৈতিক নেতা নুপুর সাহাকে সমর্থন করে ফেসবুকে পোস্ট দেন। এই ঘটনায় বিক্ষুব্ধ জনতা শিক্ষকদের তিনটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসসহ অভিযুক্ত ছাত্রকে জুতার মালা পরানো হয়।

সম্প্রতি মির্জাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির একজন শিক্ষার্থী একই ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানান জেলা শিক্ষা অফিসার।

শিক্ষক লাঞ্ছনার পর গত ২৮ জুন জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এস এম ছায়েদুর রহমান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মোবাইল নিয়ে যাওয়া বন্ধ করতে জেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর অধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক ও মাদ্রাসার সুপারদের লিখিত নির্দেশনা দেন। নির্দেশনায় বলা হয়, শিক্ষা প্রশাসনের ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনকালে নির্দেশনাগুলোর বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করবেন। পরিদর্শনকালে কোনও শিক্ষার্থীর কাছে মোবাইল পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট সবার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন তারা।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের অফিস আদেশে বলা হয়, সম্প্রতি লক্ষ করা যাচ্ছে যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন আনা নিষেধ থাকা সত্ত্বেও তারা গোপনে মোবাইল আনছে এবং ভালো-মন্দ, কোনও কিছু বিবেচনা না করে বিভিন্ন ধরনের বিতর্কিত পোস্ট, লাইক এবং শেয়ার নিয়ে বিব্রতকর ও উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। ইতোমধ্যে মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ও মির্জাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির একজন শিক্ষার্থী এ ধরনের একটি করে পোস্ট নিয়ে চরম অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। ফলে প্রতিষ্ঠান দুটি সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে হয়েছে।

এমতাবস্থায়, সুধী সমাজের পক্ষ থেকে দাবি উঠেছে—শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মোবাইল ব্যবহারের বিষয়টি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য। পরিস্থিতি বিবেচনায় নির্দেশনা অনুসরণ করার জন্য প্রতিষ্ঠান প্রধানদের অনুরোধ করা হলো।

নির্দেশনা

১) মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং কলেজ ও মাদ্রাসার দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা কোনোভাবেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মোবাইল ফোন আনতে পারবে না।

২) মোবাইল না আনার নির্দেশনাটি কঠোরভাবে বাস্তবায়নের জন্য শিক্ষকদের তৎপর থাকতে হবে এবং প্রয়োজনে শিক্ষার্থীদের ব্যাগ চেক করা যেতে পারে।

৩) কোনও শিক্ষার্থীর কাছে মোবাইল ফোন পাওয়া গেলে তা জব্দ করাসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

৪) মোবাইল ফোনের ব্যবহার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে না আনার বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য ঈদের ছুটির পর নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নিয়ে অভিভাবক সমাবেশের আয়োজন করতে হবে।


This page has been printed from Daily Jubokantho - https://www.jubokantho.com/120891 ,   Print Date & Time: Tuesday, 17 June 2025, 02:32:44 AM
Developed by: Dotsilicon [www.dotsilicon.com]
© 2025 SAASCO Group