• হোম > জাতীয় > সারা রাত লাইনে দাঁড়িয়ে হাতে ‘সোনার টিকিট

সারা রাত লাইনে দাঁড়িয়ে হাতে ‘সোনার টিকিট

  • শনিবার, ২ জুলাই ২০২২, ১০:৪৪
  • ৩৭১

সংগৃহীত ছবি

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রির দ্বিতীয় দিনেও রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে টিকিট প্রত্যাশীদের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। আজ (শনিবার) সকাল ৮টা থেকে বিভিন্ন রুটে অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়। বরাবরের মতো এবারও কাউন্টারের পাশাপাশি অর্ধেক টিকিট মিলবে অনলাইনে।

শনিবার সকালে কমলাপুর স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, হাজার হাজার মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে তাদের কাঙ্ক্ষিত ‘সোনার টিকিট’ পেতে। প্রতিটি কাউন্টারের সামনেই মানুষের দীর্ঘ লাইন। সকাল ৮টা বাজতেই শুরু হয় শোরগোল। প্রতীক্ষার প্রহর শেষ হচ্ছে, তাই এই শোরগোল। টিকিট হাতে পেয়ে খুশি সবাই। দীর্ঘ অপেক্ষার পর টিকিট পাওয়ার আনন্দকে ফ্রেমবন্দিও করছিলেন অনেকে।

সকাল ৮টায় কথা হয় বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মনিরুল ইসলামের সাথে। সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেসে তিনি সবার আগে টিকিট পেয়েছেন। এই রুটে তিনি ১ নম্বর সিরিয়ালধারী। মনিরুল বলেন, রাত ১১টার একটু আগে আমি সিরিয়ালে দাঁড়াই। এরপর আমার পেছনে অন্য সবাই সিরিয়ালে দাঁড়ায়।

তিনি বলেন, চারটা টিকিট কেটেছি। বোন-ভাগ্নীদের নিয়ে যাব। টিকিট পেয়ে খুবই ভালো লাগছে। সারা রাত না ঘুমিয়ে মশার কামড় খেয়েছি, টিকিট না পেলে খুবই খারাপ লাগতো।

তবে, ট্রেনের টিকিট কাটতে সারারাত লাইনে দাঁড়ানোর পক্ষে নন মনিরুল। তিনি বলেন, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ট্রেনের টিকিট কাটার পদ্ধতি আরও সহজ করতে পারতো। বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আমরা তাদের কাছে এর চেয়ে ভালো কিছু প্রত্যাশা করি।

সংগৃহীত ছবি

একই পথের যাত্রী সোহেল আহমেদ। তার সিরিয়াল ছিল ১২। সোহেল বলেন, ভাই-বোন ও পরিবারকে নিয়ে বাড়িতে ঈদ করতে যাব। রাত ১১টায় লাইনে দাঁড়িয়েছি। ৮টা ২০ মিনিটে টিকিট পেলাম। কোনো অনিয়ম চোখে পড়েনি। কারণ, আমরা যারা টিকিট কাটব তারাই লাইন করেছি। এতটা সময় লাইনে দাঁড়ানো কষ্টকর হলেও টিকিট পেয়ে খুবই ভালো ল

রংপুর এক্সপ্রেসের টিকিট কাটার জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. মনিরুজ্জামান। তিনি জানান, গতকাল বিকেল ৫টা থেকে লাইনে আছেন। রংপুরের রুটে তার সিরিয়াল ৩২ নম্বর। সকাল ৯টার সময়ও তিনি টিকিট পাননি।

মনিরুজ্জামান বলেন, অনলাইনে যে ৫০ শতাংশ টিকিট দিয়েছে, সেগুলো দুয়েকজন ছাড়া অন্য কেউই পায় না। এসব টিকিট ব্ল্যাকে বিক্রি হয়। বাকি ৫০ শতাংশ টিকিটের জন্য লাইনে চাপ পড়ে যায়। লাইনে যারা থাকে, তারা যেহেতু চারটা করে টিকিট কাটতে পারে তাই ৬০-৭০ জন টিকিট পায়। বাকিরা লাইন ধরেও পায় না। এজন্য প্রথম ৬০-৭০ জনের মধ্যে থাকতে অনেকেই ২০-২৫ ঘণ্টা আগে লাইনে দাঁড়ায়। এত আগে লাইনে দাঁড়িয়েও যে টিকিট পাবে, তার নিশ্চয়তা নেই।

তিনি বলেন, রেলওয়ের এই সিস্টেম অবশ্যই ভালো নয়। অনলাইনের টিকিটগুলো যদি ব্ল্যাকে না যেতো, তাহলে অনেক মানুষ অনলাইনেই টিকিট কাটতে পারতো। রাত জেগে না ঘুমিয়ে এই কষ্ট অনেকেরই করা লাগতF

এবারের ঈদযাত্রায় অগ্রিম টিকিট বিক্রি হচ্ছে ৬টি স্টেশনে। সমগ্র উত্তরাঞ্চলগামী আন্তঃনগর ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম ঈদ স্পেশাল ট্রেনের টিকিট মিলবে ঢাকা (কমলাপুর) রেলস্টেশনে। রাজশাহী ও খুলনাগামী সব আন্তনগর ট্রেনের টিকিট বিক্রি হবে ঢাকা (কমলাপুর) শহরতলী প্ল্যাটফর্মে। চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীগামী সব আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট বিক্রি হবে ঢাকা বিমানবন্দর রেল স্টেশনের কাউন্টারে। ময়মনসিংহ, জামালপুর, দেওয়ানগঞ্জগামী সব আন্তঃনগর ট্রেন ও দেওয়ানগঞ্জ ঈদ স্পেশাল ট্রেনের টিকিট বিক্রি হবে তেজগাঁওয়ে। মোহনগঞ্জগামী মোহনগঞ্জ ও হাওর এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট বিক্রি হবে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে, সিলেট ও কিশোরগঞ্জগামী সব আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট বিক্রি হবে ফুলবাড়িয়ায় এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম (পঞ্চগড়) এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট বিক্রি করা হবে জয়দেবপুর স্টেশনে।

ঈদুল আজহা উপলক্ষে যাত্রীদের সুবিধার্থে ৬ জোড়া বিশেষ ট্রেন পরিচালনা করা হবে। সেগুলো হলো- দেওয়ানগঞ্জ স্পেশাল, চাঁদপুর স্পেশাল ১, ২, বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম (পঞ্চগড়) ঈদ স্পেশাল, শোলাকিয়া স্পেশাল ১, ২।

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানায়, আজ ২ জুলাই দেওয়া হচ্ছে ৬ জুলাইয়ের টিকিট। ৩ জুলাই দেওয়া হবে ৭ জুলাইয়ের টিকিট, ৪ জুলাই ৮ জুলাইয়ের এবং ৯ জুলাইয়ের টিকিট ৫ জুলাই বিক্রি হবে। এছাড়া ১১ জুলাইয়ের ট্রেনের ফিরতি টিকিট ৭ জুলাই, ১২ জুলাইয়ের টিকিট ৮ জুলাই, ১৩ জুলাইয়ের টিকিট ৯ জুলাই এবং ১৪ ও ১৫ জুলাইয়ের টিকিট বিক্রি করা হবে ১১ জুলাই। অনলাইন টিকিটের অর্ধেক ওয়েবসাইটে এবং অর্ধেক অ্যাপে বিক্রি করা হবে।


This page has been printed from Daily Jubokantho - https://www.jubokantho.com/120896 ,   Print Date & Time: Tuesday, 16 September 2025, 01:09:05 PM
Developed by: Dotsilicon [www.dotsilicon.com]
© 2025 SAASCO Group