• হোম > আওয়ামীলীগ > বিএনপি বিদেশিদের দিয়ে সরকার উৎখাত করার স্বপ্ন দেখছে : হানিফ

বিএনপি বিদেশিদের দিয়ে সরকার উৎখাত করার স্বপ্ন দেখছে : হানিফ

  • শনিবার, ২০ আগস্ট ২০২২, ১২:৪৭
  • ৩৬৭

 ছবি: সংগৃহীত

বিএনপি বিদেশিদের দিয়ে সরকার উৎখাত করার স্বপ্ন দেখছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি।

তিনি বলেছেন, ‌‘মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানের পরাজয় হলেও বাংলাদেশে তাদের এজেন্টরা এখনো বেঁচে আছে। তারা নানা মিথ্যাচার করে, অভিযোগ করে বিদেশিদের দিয়ে সরকার উৎখাত করার স্বপ্ন দেখছে।’

আজ শুক্রবার বিকাল ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই ফ্লোরে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় : বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবার’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শোকসভার আয়োজন করে ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন।

হানিফ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার স্বপ্ন, আদর্শকে হত্যা করা হয়েছে। রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের জন্য তাকে হত্যা করা হয়নি। একাত্তরের পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে পাকিস্তান ও তাদের দোসর পশ্চিমা মহাশক্তিধর রাষ্ট্র এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিল। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে ক্ষান্ত হয়নি। স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে হত্যা করতে চায়। বঙ্গবন্ধুর পরিবারের প্রতি এখনো তাদের বিদ্বেষ আছে। তাই তারা এখনো ষড়যন্ত্র করছে।’

বাংলাদেশে রাজনীতিতে দুটি ধারা সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘একটি হলো বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি। আরেকটি হলো বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বে স্বাধীনতাবিরোধী প্লাটফর্ম। এই ধারা পাকিস্তানের নির্দেশে চলে।’

হানিফ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশ এক ও অভিন্ন। বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস বলতে গেলে বাংলাদেশ আসে আর বাংলাদেশের ইতিস বলতে গেলে বঙ্গবন্ধুর জীবনী চলে আসে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা কি কোনো গোলটেবিল বৈঠকে এসেছে? কোনো মেজর হুইসেলে এসেছে? জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা এসেছে।’

আওয়ামী লীগের এই সিনিয়র নেতা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা বইয়ে লিখেন, বঙ্গবন্ধু হত্যায় কতিপয় বিপথগামী সেনাসদস্য জড়িত। শুধু কতিপয় বিপথগামী সদস্য জড়িত ছিল না। ১৯৭১ সালে পরাজিত হওয়া পাকিস্তান ও তাদের মিত্র পশ্চিমা মহাশক্তিধর রাষ্ট্র পরাজয়ের পতিশোধ নিতে উন্মুখ ছিল। তখন থেকেই তারা বঙ্গবন্ধু হত্যার প্লট রচনা করেছে। রাজাকার, আলবদরেরা ধাপে ধাপে পরিকল্পনা করেছে এবং বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে।’

‘শিক্ষাঙ্গনে নৈতিক অবক্ষয় দেখলে দুঃখ হয়। বাংলাদেশের শিক্ষার মান নিম্নগামীর জন্য ছাত্র রাজনীতি নয় বরং শিক্ষক রাজনীতি দায়ী। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বাংলাদেশের ইতিহাস বিকৃতি করেছেন। কীসের লোভে করেছেন? কার স্বার্থে এসব হয়েছে?’ এমন প্রশ্ন রাখেন তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সঠিকভাবে তুলে ধরার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই বাংলাদেশ এমনি এমনি হয়নি। দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ধরে রাখতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। তবেই আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার পথে এগিয়ে যেতে পারব।’

হানিফ বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিন ৫ সেপ্টেম্বর, তা তার এসএসসির সার্টিফিকেটে আছে। উনার পিতা মরহুম ইস্কান্দার মজুমদার মাসিক ‘নিপুণ’-এ এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, খালেদা জিয়া ৫ সেপ্টেম্বর জন্ম নিয়েছিলেন। আর ১৯৯৩ সালে ক্ষমতায় থাকতে তিনি ১৫ আগস্ট জন্মদিন পালন শুরু করেন। বঙ্গবন্ধুর শাহাদাতবার্ষিকীতে সারা জাতি যখন কাতর থাকে সেই দিন মিথ্যা জন্মদিন পালন করে খালেদা জিয়া উল্লাস করেন।’

‘বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে ছিলেন জিয়াউর রহমান’ এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যায় যারা মূল চক্রান্তকারী তাদের মুখোশ উন্মোচন হয়নি। জিয়াউর রহমান তার বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে প্রমাণ রেখে গেছেন তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যায় জড়িত ছিলেন। হত্যাকাণ্ডে পাকিস্তানের এজেন্ট হিসেবে কাজ করেছেন।’

‘জিয়া বঙ্গবন্ধু হত্যায় জড়িত না হলে কেন আত্মস্বীকৃত খুনিদের পুরস্কৃত করেছিলেন’ এমন প্রশ্ন রেখে হানিফ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিরা ক্যান্টনমেন্টে একাধিকবার বৈঠক করেছে। ব্রিটিশ সাংবাদিক অ্যান্থনি মাসকারেনহাসের সাথে সাক্ষাৎকারে খুনি ফারুক বলেছে, জিয়াউর রহমান তাদের বলেছিলেন তোমরা এগিয়ে যাও। আমি তোমাদের পেছনে আছি। সামনে আসতে পারবো না। তোমরা এগিয়ে যাও, আমি আছি। জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ইনডেমনিটি করে বিচার বন্ধ করেছিলেন। তিনি খুনিদের রাষ্ট্রীয়ভাবে পুরস্কৃত করেছেন। এসবই প্রমাণ করে তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যায় জড়িত ছিলেন।’

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের দণ্ডপ্রাপ্ত অনেকের রায় কার্যকর হয়েছে। কয়েকজন আত্মস্বীকৃত খুনি পালিয়ে আছে, তাদের রায় কার্যকর হয়নি। প্রত্যাশা করছি, দ্রুত কার্যকর করে আমরা জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করব।’

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী পারভেজ এতে সভাপতিত্ব করেন।

এ ছাড়া আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ, সাবেক মহাসচিব রঞ্জন কর্মকার, জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা রকিবুল হাসান, বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন হক আরা মিনু, কবি ও সংস্কৃতিকর্মী তারিক সুজাত। স্বাগত বক্তব্য দেন ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মোল্লা মোহাম্মদ আবু কাওছার।

এর আগে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় : বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবার’ নিয়ে বিশেষ সংখ্যা ‘যাত্রিক’ এর মোড়ক উন্মোচন করেন অতিথিরা।


This page has been printed from Daily Jubokantho - https://www.jubokantho.com/124122 ,   Print Date & Time: Tuesday, 17 June 2025, 04:56:28 AM
Developed by: Dotsilicon [www.dotsilicon.com]
© 2025 SAASCO Group