• হোম > ঢাকা | বাংলাদেশ | বিশেষ নিউজ > ফরিদপুরে চা বিক্রি করা মেয়েটি পেলো জিপিএ- ৫

ফরিদপুরে চা বিক্রি করা মেয়েটি পেলো জিপিএ- ৫

  • সোমবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৩, ১৫:২৯
  • ৪৪৪

স্মৃতি পারভীন এইচএসসি পরীক্ষায়  জিপিএ -৫ ।

নাজমুল হাসান নিরব, ফরিদপুর প্রতিনিধি :

ফরিদপুরের বোয়ালমারী ময়না ইউনিয়নের ময়না গ্রামের গাছ ব্যবসায়ী মো. হারুনার রসিদের মেঝ মেয়ে স্মৃতি। এবছর এইচএসসি পরীক্ষায় বোয়ালমারী কাজী সিরাজুল ইসলাম মহিলা কলেজের কারিগরি শাখা থেকে জিপিএ -৫ পেয়েও ভবিষ্যত পড়ালেখার চিন্তায় বিষন্ন সে।

জানা যায়, আর পাঁচটি শিক্ষার্থীর মতো মসৃণ ছিল না স্মৃতি পারভীনের শিক্ষা জীবন। গাছ ব্যবসায়ী পিতার অনটনের সংসারের একটু সচ্ছলতার জন্য দুই বোন তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় বাড়ীর নিকট ইউনিয়ন পরিষদের সামনে চায়ের দোকান দিয়ে চা বিক্রি করা শুরু করে সংসারের হাল ধরে । মেধাবী শিক্ষার্থী হওয়া শর্তেও জীবন যুদ্ধে সকাল থেকে পালাক্রমে দুই বোনকে সামলাতে হয়েছে দোকানদারি, তার পাশাপাশি চালিয়ে গিয়েছে পড়ালেখা। এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে স্মৃতি পারভীন। ভালো কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চায় স্মৃতি। চায় ভবিষ্যতে বিসিএস ক্যাডার হতে।

কিন্তু তিন ভাই বোনের পড়া লেখা সাথে সংসারের হাল ধরা স্মৃতি জানে না সেটা সম্ভব হবে কিনা। বড় বোন মনিকা ফরিদপুর সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজ থেকে অনার্স শেষ করে মাস্টার্স-এ ভর্তির অপেক্ষায়। ছোট ভাই স্থানীয় এসি বোস ইনিস্টিউটের শিক্ষার্থী। পিতার অনটনের সংসারে অনিশ্চিত তার পড়ালেখা।

স্মৃতি পারভীন ময়না সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে ভর্তি হয় ময়না এসি বোস ইনিস্টিউটে। সেখান থেকে সাফল্যের সাথে এসএসসি পাস করে ভালো কলেজে সুযোগ পেয়েও সংসারের অনটনের জন্য ভর্তি হতে হয় উপজেলা সদরের কাজী সিরাজুল ইসলাম মহিলা কলেজে।

স্মৃতির মা আসমা আক্তার বলেন, পরিবারের অভাব ঘুচাতে স্মৃতি দোকানের ভার গ্রহণ করেন। আস্তে আস্তে দোকানের একপাশে গড়ে তুলেন ছোট একটি চায়ের স্টল। চা বিক্রির ফাঁকে বই নিয়ে পড়াশোনা করতো আমার মেয়ে। তারই ফল পেয়েছে, আমরা গর্বিত।

তার বাবা হারুন শেখ জানান, মেয়ের এ সাফল্যে তিনি খুবই আনন্দিত। এর আগে তার আরেক মেয়ে অনার্স পাশ করায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাকে ৫০ হাজার টাকা অনুদান দেন। এই টাকা বিরাট কাজে লাগে তাদের পড়াশোনার এ সাফল্যে।

কলেজটির অধ্যক্ষ মো ফরিদ আহমেদ জানান, অত্যন্ত মেধাবী শিক্ষার্থী স্মৃতি পারভীন। হতদরিদ্র পরিবারের মেয়ে সে, পড়ালেখার পাশাপাশি চা বিক্রি করত স্মৃতি পারভীন। যে কারনে নিয়মিত ক্লাস করতে পারে নাই।বিষয়টি জানার পরে আমরা তাকে সুযোগ করে দিয়েছি, তার সাফল্যে আমরা খুশি এবং সে যাতে ভালো কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পায় সে ব্যাপারে আমাদের কলেজের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করবো।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য মো. বাচ্চু শেখ জানান, স্মৃতির এই সাফল্যের খবর জেনে তিনি তাদের বাড়িতে গিয়ে অভিনন্দন জানিয়েছেন। সারা গ্রামের মানুষ এ খবরে আনন্দিত। তারা ভবিষ্যতে পড়াশোনা করে আরও বড় হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।


This page has been printed from Daily Jubokantho - https://www.jubokantho.com/132642 ,   Print Date & Time: Monday, 16 June 2025, 05:34:48 PM
Developed by: Dotsilicon [www.dotsilicon.com]
© 2025 SAASCO Group