• হোম > বাংলাদেশ | বিশেষ নিউজ | রংপুর > শাহীনের আবিষ্কারে মুগ্ধ-বিস্মিত গাইবন্ধার মানুষ

শাহীনের আবিষ্কারে মুগ্ধ-বিস্মিত গাইবন্ধার মানুষ

  • মঙ্গলবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৪, ১০:৫৩
  • ৬৬১

ক্ষুদে বিজ্ঞানী শাহীন

গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি:

জ্বালানি তেল ও বিদ্যূৎ ছাড়াই ফেলে দেওয়া কনটেইনার-বোতলের মাধ্যমে বায়ুশক্তিকে ব্যবহার করে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন যন্ত্র আবিষ্কার করেছেন ক্ষুদে বিজ্ঞানী শাহীন। শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও ৪০টি বিস্ময়কর আবিষ্কার জমা পড়েছে তার ঝুলিতে।

শাহীনের আবিষ্কারের তালিকায় রয়েছে ভূমিক¤প সতর্কতা অ্যালার্ম সিস্টেম, চুরি রোধে অনলাইন মেসেজিং সিস্টেম। তার আশ্চর্যমূলক আরেকটি আবিষ্কার হলো মোবাইলফোনের গোপনীয়তা রক্ষার্থে রয়েছে এমন এক ধরনের বিশেষ চশমা। যা মোবাইল ফোনের স্ক্রিনকে ব্যবহারকারীর চোখে ঠিকঠাক দেখালেও বাকি সবার চোখে তা দেখাবে সাদা।

বর্তমানে বেতার-বিদ্যুৎ সঞ্চালন বিষয়ে গবেষণা করছেন এ ক্ষুদে বিজ্ঞানী। অল্প দূরত্বে সাফল্য পেলেও তা ৩ কিলোমিটার পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছেন তিনি। শাহীন গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার খুকশিয়া গ্রামের মৃত শাহারুল ইসলামের ছেলে। পেশায় দর্জি ছিলেন শাহীনের বাবা। ২০২১ সালে নাকাইহাট বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন শাহীন। আর্থিক সমস্যার কারণে তার বিজ্ঞান নিয়ে পড়া হয়নি। বর্তমানে নাকাইহাট ডিগ্রি কলেজে মানবিক বিভাগে পড়াশোনা করছে। কলেজে ভর্তির পরপরই ২০২৩ সালে ৪৪তম বিজ্ঞান মেলায় অংশগ্রহণ করে শাহীন।

মেলায় তার আবিষ্কারগুলো উপজেলা, জেলা, বিভাগীয় এবং জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কার এনে দেয়। এছাড়া বঙ্গবন্ধু মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে প্রথম স্থান লাভ করেন তিনি। মানবিক বিভাগে পড়েও অসাধারণ বিজ্ঞানমনস্ক শাহীন। তার আবিষ্কারে মুগ্ধ-বিস্মিত স্থানীয়রা। হাতের কাছে পাওয়া জিনিসপত্র দিয়ে শাহীন বানিয়ে ফেলেছেন কোনো যন্ত্র। একের পর এক সফলতা তাকে আরও উদ্বুদ্ধ করেছে এগিয়ে যেতে। এভাবে তার থলিতে জমেছে ৪০টির অধিক সাফল্য।

শাহীন বলেন, ছোটবেলা থেকেই বিশেষ কিছু দেখলেই তা নিয়ে গবেষণা-আবিষ্কারের অদ্ভুত এক আগ্রহ সৃষ্টি হয় মনে। যেখানেই কোনো সমস্যা দেখছেন সেটা সমাধান করার চেষ্টা করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, তার লক্ষ্য এসব যন্ত্রগুলো সাশ্রয়ী মূল্যে মানুষের হাতে পৌঁছে দেওয়া। সেই সঙ্গে গবেষণাকে আরও এগিয়ে নেওয়া। তবে শাহীনের এগিয়ে যাওয়ার পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে অর্থসংকট। সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে দেশের চলমান এ অগ্রযাত্রায় ভূমিকা রাখতে দৃঢ় প্রত্যয়ী শাহীন।

শাহীনের মা শোভারাণী বলেন, বিজ্ঞান চর্চার মাধ্যমে আবিষ্কারের নেশা আমার ছেলের ছোটবেলা থেকেই। পাঁচ ছেলে-মেয়ের মধ্যে শাহীন ৪র্থ। স্বামী মৃত্যুর পর অনেক কষ্ট করে ৩ ছেলে আর ২ মেয়েকে বড় করেছি। ছেলের ধারাবাহিক অর্জনে আমি গর্বিক। তবে অর্থসংকটে গবেষণা-আবিষ্কার বাধাগ্রস্ত হওয়ায় ছেলের সঙ্গে ব্যথিত তিনি। নাকাইহাট ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আশরাফ আলী প্রধান বলেন, শাহীন অত্যন্ত প্রতিভাবান। মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী হয়েও নতুন কিছু আবিষ্কারে। আবিষ্কারের অভিনবত্ব তাকে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠত্বের সম্মান এনে দিয়েছে।


This page has been printed from Daily Jubokantho - https://www.jubokantho.com/134551 ,   Print Date & Time: Thursday, 18 December 2025, 02:22:00 PM
Developed by: Dotsilicon [www.dotsilicon.com]
© 2025 SAASCO Group