কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার জেরে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিল ভারত। এবার পাকিস্তান থেকে সরাসরি কিংবা ঘুরপথে সব ধরনের পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
শনিবার (৩ মে) জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে ভারতীয় সরকার জানায়,“জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে পাকিস্তান থেকে উৎপন্ন বা রপ্তানিকৃত যেকোনো পণ্য আমদানি অবিলম্বে নিষিদ্ধ করা হলো। এই আদেশ পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।”
২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর গুলিবর্ষণ করে লস্কর-ই তৈয়বা’র উপশাখা দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (TRF)। ঘটনায় কমপক্ষে ২৬ জন নিহত হন—এটি ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর অঞ্চলটিতে সবচেয়ে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে বিবেচিত।
ঘটনার পরপরই ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক পদক্ষেপ নেয়।
এরমধ্যে রয়েছে—
সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত
দুই দেশের কূটনীতিক প্রত্যাহার
পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিল
পাকিস্তানি জাহাজের ভারতীয় বন্দর ব্যবহার নিষিদ্ধ
পাকিস্তান হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করলেও নয়াদিল্লি তার বিরুদ্ধে ‘প্রত্যক্ষ মদদের’ অভিযোগ তুলেছে। পাল্টা জবাবে ইসলামাবাদও একগুচ্ছ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে—
ভারতের জন্য স্থল ও আকাশসীমা বন্ধের হুমকি
দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বন্ধ
পাকিস্তানে থাকা ভারতীয়দের ভিসা বাতিলের উদ্যোগ
পাকিস্তান থেকে ভারতীয় বাজারে সরাসরি পণ্য প্রবেশের হার গত কয়েক বছরে তলানিতে নেমেছে।
২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর ভারত:
পাকিস্তানি পণ্যে ২০০% শুল্ক আরোপ করে
MFN (Most Favoured Nation) সুবিধা বাতিল করে
২০২৪-২৫ অর্থবছরে পাকিস্তান থেকে ভারতের আমদানি ছিল মাত্র ৪.২ লাখ ডলার, যা মোট আমদানির ০.০০০১ শতাংশেরও কম।
তবে এতদিন দুবাই হয়ে ঘুরপথে কিছু পণ্য যেমন মশলা, পোশাক, যন্ত্রাংশ ভারতীয় বাজারে ঢুকছিল। এবার সেই পথও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এসব ঘুরপথে আসা পণ্য শনাক্ত করতে বিশেষ নজরদারি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, উত্তপ্ত সীমান্ত পরিস্থিতি এবং পাল্টাপাল্টি প্রতিক্রিয়ার জেরে দক্ষিণ এশিয়ায় কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক পরিবেশ আরও জটিল হয়ে উঠছে।
