সিলেট সীমান্তঘেঁষা ভারতের মেঘালয় রাজ্যে রাত্রিকালীন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা (কারফিউ) জারি করেছে ভারতীয় প্রশাসন। ৮ মে থেকে কার্যকর হওয়া এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতিদিন রাত ৮টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত সীমান্তবর্তী এলাকায় সাধারণ মানুষের চলাচল সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ থাকবে।
ভারতীয় গণমাধ্যমের বরাতে জানা যায়, মেঘালয়ের পূর্ব ও পশ্চিম জয়ন্তিয়া হিলস, পূর্ব খাসি হিলস, দক্ষিণ গারো হিলস এবং পশ্চিম গারো হিলস জেলার সীমান্তসংলগ্ন অঞ্চলগুলোতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সীমান্তের শূন্যরেখা থেকে ২০০ মিটার থেকে ১ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকা ‘নিরাপত্তা সংবেদনশীল’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
প্রশাসনিক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, কারফিউ চলাকালীন নিচের কার্যকলাপ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ থাকবে:
পাঁচজন বা ততোধিক ব্যক্তির জমায়েত
অস্ত্র, লাঠিসোঁটা বা বিপজ্জনক বস্তু বহন
গবাদিপশু ও পণ্য পরিবহন (বিশেষ করে চা পাতা, সুপারি, পানের পাতা ও শুকনা মাছ)
সীমান্ত অতিক্রম বা অবৈধ অনুপ্রবেশ
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার সিলেটের তামাবিল সীমান্তে যৌথ জরিপ কার্যক্রম চলাকালে ভারতীয় বিএসএফ বাধার মুখে পড়ে এবং স্থানীয়দের আপত্তিতে জরিপ বন্ধ হয়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছে, এই ঘটনার পরই সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপের সিদ্ধান্ত নেয় ভারতীয় প্রশাসন।
কানাইঘাট উপজেলার বাসিন্দা তাওহীদুল ইসলাম বলেন, “যারা বৈধভাবে চলাফেরা করেন, তাদের জন্য এটা সমস্যা নয়। তবে যারা চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত, তাদের জন্য এটা কঠিন হবে।”
জৈন্তাপুর উপজেলার মো. সাজু হোসেন বলে“কারফিউ চলাকালে অনেক কৃষক ভোরে মাঠে যেতে পারবেন না। তাই সাধারণ মানুষের সমস্যা যেন না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।”
সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. শের মাহবুব মুরাদ বলেন, “ভারতের এই সিদ্ধান্ত তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তবে সীমান্তে যাতে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি না ঘটে, সে জন্য আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে।”
তিনি জানান, বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় মাইকিং ও সচেতনতামূলক প্রচার চালানো হচ্ছে, যাতে কেউ আইন না ভাঙেন এবং অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়ানো যায়।
