যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনে বিশেষ সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ইলন মাস্ক আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। স্থানীয় সময় বুধবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে এই সিদ্ধান্ত জানান বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনকুবের ও টেসলা সিইও।
ইলন মাস্ক তার পোস্টে লেখেন,“বিশেষ সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে আমার নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ায় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানাতে চাই এই সুযোগ দেওয়ার জন্য।”
তিনি জানান, তার নেতৃত্বাধীন ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি (ডিওজিই) ভবিষ্যতেও আরও কার্যকরভাবে কাজ করে যাবে এবং সরকারে দক্ষতার সংস্কৃতি গড়ে তুলবে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় ফিরে আসার পর মাস্ককে নিয়োগ দেওয়া হয় ডিওজিই’র প্রধান হিসেবে। লক্ষ্য ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল বাজেট থেকে ১ ট্রিলিয়ন ডলার খরচ কমানো। তবে সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ১৭৫ বিলিয়ন ডলার সাশ্রয় হয়েছে, যা মার্কিন নাগরিকপ্রতি গড়ে ১০৮৮.৯৬ ডলার।
মাস্কের পদত্যাগ এমন এক সময়ে এলো, যখন তিনি ট্রাম্পের নতুন বাজেট বিল “বিগ, বিউটিফুল বিল”-এর সমালোচনায় মুখর ছিলেন।
ওই বিলের আওতায় ২০১৭ সালের কর ছাড়ের মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে, সঙ্গে খাদ্য সহায়তা ও মেডিকেইড সুবিধার জন্য কাজের শর্ত যুক্ত করা হয়েছে—যা নিয়ে মাস্ক প্রকাশ্যেই অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান,“ইলন মাস্ক আজ রাত থেকেই প্রশাসন ছাড়ার প্রক্রিয়া শুরু করছেন। তবে ডিওজিই’র কার্যক্রম চলমান থাকবে এবং সরকারকে ছোট ও কার্যকর করার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, মাস্কের পদত্যাগ ট্রাম্প প্রশাসনের অভ্যন্তরীণ মতবিরোধের ইঙ্গিত দিতে পারে। একইসঙ্গে ২০২6 সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগে ট্রাম্পের বাজেট নীতি নিয়ে রিপাবলিকান শিবিরের মধ্যেই দ্বিধা তৈরি হচ্ছে।
ইলন মাস্ক এর আগেও জলবায়ু চুক্তি, সেন্সরশিপ ও ট্যাক্স সংস্কারের প্রশ্নে ট্রাম্প প্রশাসনের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নিয়েছিলেন। তবে এবার প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের একটি পদ থেকেই সরে দাঁড়ানো প্রযুক্তি ও রাজনীতির আবহে নতুন মাত্রা যোগ করল।
