ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর জেলে পল্লীতে কয়েক দিনের টানা ভারীবর্ষণে ব্যাপক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বর্ষণে পল্লীর বেশীরভাগ বসতবাড়ির ঘরে পানি ঢুকেছে। রান্নাবান্না ও মলত্যাগের স্থান পানির নীচে থাকায় ও পয়ঃপ্রণালি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নিত্যকর্মে ব্যাপক বিঘ্ন ঘটছে। পানিবন্দী পরিবারগুলোর নিকট দূরত্বে অবস্থিত ইউনিয়ন পরিষদের পাবলিক টয়লেট ও বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে প্রাতঃকর্ম সারছেন। এখানে বসবাসকারী প্রায় ২ শতাধিক জেলে ও বণিক পরিবারের প্রায় সহস্রাধিক লোকজন চরম মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। জলাবদ্ধ পানি দূষিত হয়ে রোগজীবাণু ছড়াচ্ছে ও অনেকেই ইতোমধ্যে পায়ের ঘা রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এ পরিস্থিতির প্রায় ৩ দিন অতিবাহিত হলেও কোন জনপ্রতিনিধি বা সরকারি কর্মকর্তা তাদের খোঁজখবর নিতে যায়নি।
জানা গেছে, কৃষ্ণপুর জেলে পল্লীতে প্রতি বছর বৃষ্টি মৌসুমে বর্ষণে এই এলাকা এভাবেই জলাবদ্ধ হয়ে জনদুর্ভোগের সৃষ্টি করে। স্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতা নিরসনে কোন সরকারই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। নির্বাচনের আগে অনেকেই আশ্বাস দিয়ে থাকেন কিন্তু কাজের কাজ কিছুই করেন না।
গত শুক্রবার বিকেলে সরেজমিনে তথ্য সংগ্রহকালে এমন কথাই বলেছেন ভুক্তভোগীরা।
জেলে পল্লীর বিমল সরকার (৬৫) জানান, প্রায় ২ যুগ ধরে আমাদের জেলে পল্লীতে ভারী বর্ষণ হলে ঘরবাড়িতে পানি জমে যাওয়ার কারণে আমাদের চলাচল রান্নাবান্না কাজকর্মে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। আমরা এখানকার দরিদ্র ও হতদরিদ্র লোকজন জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধান চাই।
তাপসী রাণী সরকার (৫৫) বলেন, ভোট আসলে আমাদের আদর বাড়ে। পরবর্তীতে আমাদের কেউ খোঁজ নেয় না। এত পানির মধ্যে আমরা কীভাবে বসবাস করব। চেয়ারম্যান মেম্বরদের বলি তারা আমাদের কথা শোনেনা।
বিকাশ মালো (২৫) সহ বিভিন্ন নারী পুরুষ জানান আমাদের দুঃখ কষ্টের কেউ খোঁজ খবর নেয়নি। কাদা ও পানির মধ্যে হাটা চলাফেরা করে পায়ে ঘা হয়ে গেছে। ছেলেমেয়েরা ঘরের মধ্যে আটকা থাকতে চায়না। পঁচা পানিতে নেমে তাদেরও অসুখবিসুখ হচ্ছে। বৃষ্টি মৌসুমে আমাদের দুঃখকষ্টের সীমা থাকেনা। প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আকুল আবেদন আমাদের দুঃখকষ্টের একটু খোঁজখবর নেয়ার।
এ প্রসঙ্গে কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান তিতাস জানিয়েছেন, যদি স্থানীয়রা জায়গা দেয় তবে পল্লীতে ড্রেনেজ নির্মাণ করে জলাবদ্ধতা দূরীকরণে সহায়তা করব।
![](https://www.jubokantho.com/cloud/archives/fileman/jk-ppe-ad.jpg)