২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য আজ সোমবার বিকেল ৩টায় ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট তুলে ধরবেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। এটি হবে দেশের ৫৪তম বাজেট এবং অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে প্রথম বাজেট, যার নেতৃত্বে রয়েছেন নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
এ বাজেটে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ গড়ে তোলা, আর্থিক শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার বিষয়ে জোর দেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে দুর্বল জনগোষ্ঠীর জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী সম্প্রসারণ, বিনিয়োগ ও রাজস্ব আহরণ বাড়ানোর পরিকল্পনাও রয়েছে।
আসন্ন বাজেটের আকার চলতি অর্থবছরের তুলনায় সামান্য কম হলেও রাজস্ব বাজেট বাড়িয়ে ৫ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা করার পরিকল্পনা রয়েছে। অন্যদিকে উন্নয়ন বাজেট ৩৫ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে ধরা হয়েছে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা।
সরকার চলতি বাজেটে নতুন কোনো মেগা প্রকল্প না রেখে টেকসই ও বাস্তবায়নযোগ্য প্রকল্পে মনোযোগ দিচ্ছে। শুধুমাত্র মাতারবাড়ি উন্নয়ন প্রকল্প চলমান থাকবে, যেটি জাপানের অর্থায়নে দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে বাস্তবায়িত হচ্ছে।
রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ৫ লাখ ১৮ হাজার কোটি টাকা। এতে ভ্যাট ও কর ব্যবস্থার সরলীকরণ, কর-জিডিপি অনুপাত বৃদ্ধি ও কর পরিপালন জোরদারে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এছাড়া, সরকারি ব্যয় নিয়ন্ত্রণ ও বাজেট ঘাটতি জিডিপির ৪ শতাংশের নিচে রাখতে পরিকল্পনা করা হয়েছে।
বাজেটে বেতন-ভাতা, প্রণোদনা ও ঋণ পরিশোধে বড় অংকের বরাদ্দ রাখা হচ্ছে। শুধু বেতন-ভাতার জন্য ৮২ হাজার কোটি টাকা এবং ভর্তুকির জন্য ১ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হতে পারে। এর মধ্যে কৃষি, বিদ্যুৎ, সারসহ বিভিন্ন খাতে ভর্তুকির মাধ্যমে সহায়তা অব্যাহত থাকবে।
অর্থ উপদেষ্টা জানিয়েছেন, এই বাজেট বাস্তবায়নযোগ্য ও সময়োপযোগী হবে। মুদ্রাস্ফীতি ৬.৫ শতাংশের মধ্যে রাখতে নীতিগত সমন্বয় করা হচ্ছে। জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৫.৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।
অবশেষে, সরকারের লক্ষ্য হলো জনগণের চাহিদার সাথে সামঞ্জস্য রেখে ব্যয় সংকোচন, স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা এবং আর্থিক খাতে সংস্কার সাধন। বাজেট বক্তৃতা সম্প্রচার করা হবে বিটিভি ও বেতারে, এবং অন্যান্য গণমাধ্যম বিটিভির ফিড ব্যবহার করে তা সম্প্রচার করবে।
