কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর প্রাণঘাতী হামলার জেরে চরম উত্তেজনার মধ্যে পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারত। বুধবার (৭ মে) প্রথম প্রহরে চালানো এই হামলার খবর নিশ্চিত করেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।
পাকিস্তানের আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী জানান, ভারত পাকিস্তানের কোটলি, ভাওয়ালপুর ও মুজাফফরাবাদ এলাকায় আকাশপথ থেকে ‘কাপুরুষোচিত’ হামলা চালিয়েছে। এতে এক শিশুসহ কমপক্ষে তিনজন নিহত ও অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
পাকিস্তান সেনাবাহিনী দাবি করেছে, ভারতের হামলায় কেবল নিরস্ত্র বেসামরিক নাগরিকরাই লক্ষ্যবস্তু হয়েছে। এর জবাবে উপযুক্ত প্রতিক্রিয়া জানানো হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী।
পাকিস্তানের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত ১টার দিকে মুজাফফরাবাদ ও আশপাশের পাহাড়ি এলাকায় একাধিক বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। দেশটির এআরওয়াই নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আইএসপিআর মহাপরিচালক বলেন, বিমান থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে মসজিদসহ কয়েকটি স্থাপনায়, তবে ভারতীয় বিমান পাকিস্তানের আকাশসীমায় প্রবেশ করতে পারেনি।
ভারতের পক্ষ থেকেও এই হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, ‘অপারেশন সিন্দুর’ নামের একটি অভিযানের আওতায় পাকিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে নয়টি স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে। এসব লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে জঙ্গি ঘাঁটি ও সন্ত্রাসীদের অবকাঠামো রয়েছে। তবে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কোনো স্থাপনাকে টার্গেট করা হয়নি বলে জানানো হয়।
হামলার পর ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে জানানো হয়—”ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। জয় হিন্দ।”
উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন ভারতীয় পর্যটক নিহত হন। এর পর থেকেই দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমেই তীব্র হয়ে উঠেছে। কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি বাতিলের পর এবার সেই উত্তেজনা রূপ নিয়েছে সরাসরি সামরিক সংঘাতে।
