![]()
মো: সাগর হোসেন,বেনাপোল প্রতিনিধি:
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে যশোর-১ (শার্শা) আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) কর্তৃক মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকপ্রাপ্ত প্রার্থী, সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি’র সাবেক কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক জনাব মফিকুল হাসান তৃপ্তি আজ ৯ নং উলাসী ইউনিয়ন বিএনপি আয়োজিত উঠান বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন এবং অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে লিফলেট বিতরণ করেন। বৈঠকের আয়োজকদের অক্লান্ত পরিশ্রমের জন্য তিনি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন—“একটি সফল বৈঠক করতে আপনারা যেভাবে শ্রম দিয়েছেন, তার জন্য আমি আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই।”
উঠান বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন শার্শা থানা বিএনপির সহ-সভাপতি আমিনুর রহমান নেদা। উপস্থিত ছিলেন যশোর জেলা যুবদলের যুব আহ্বায়ক ও শার্শা থানা যুবদলের সদস্য সচিব ইমদাদুল হক ইমদাদ, শার্শা থানা যুবদলের সিনিয়র যুব আহ্বায়ক আল মামুন বাবলু, বেনাপোল পৌর বিএনপি’র সহ-সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ, বেনাপোল পৌর বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেরুল্লাহ, শার্শা থানা বিএনপি’র যুগ্ম সম্পাদক তাজ উদ্দিন আহমেদ, শার্শা থানা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মনিরুল ইসলাম মনি, বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক মশিউর রহমান, শার্শা থানা বিএনপি’র তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক মুনায়েম হোসেন, শার্শা থানা মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব বদিউজ্জামান বদি, শার্শা থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক রাকিবুল হাসান রিপন, যশোর জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি শাহানুর রহমান শাওন, ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ ইনজামুল হক, শার্শা থানা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক বিপ্লব হোসেন, উলাসি ইউনিয়ন বিএনপি’র সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান, সহ-সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক শফিউর রহমান, সহ দপ্তর সম্পাদক আলী হোসেনসহ শার্শা থানা বিএনপি ও উলাসী ইউনিয়ন বিএনপির অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীবৃন্দ।
তিনি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্মৃতিচারণ করে বলেন, জিয়াউর রহমানই সারসা-শার্শা অঞ্চলের প্রকৃত উন্নয়নের রূপকার। বিশেষ করে খাল খনন কর্মসূচির মাধ্যমে এই অত্র এলাকার জলাবদ্ধতা দূরীকরণের উদ্যোগও হাতে নেওয়া হয়েছিল, যা কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। ২০০১ সাল থেকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের যশোর শাখার পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, যশোর জেলার মধ্যে শার্শা থানার মাটিই সবচেয়ে বেশি উর্বর, যা অঞ্চলের গর্ব। তিনি বলেন, “এই ইউনিয়ন হচ্ছে জিয়াউর রহমানের ইউনিয়ন, বিএনপির ইউনিয়ন, তারেক রহমানের ইউনিয়ন।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, ২০১৮ সালের ফ্যাসিবাদী সরকারের সময় সন্ত্রাসী ‘আয়নাল বাহিনী’র কারণে তিনি এই ইউনিয়নে কোনো পথসভা করতে পারেননি। ছাত্রজীবনে শহীদ জিয়াউর রহমানের হাতে হাত রেখে ছাত্রদলে যোগদানের স্মৃতি তুলে ধরে তিনি বলেন, “সেই দিনগুলো ছিল আমার রাজনীতির মধুরতম অধ্যায়।”
দলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল তাকে বহুবার ভালোবাসা ও মনোনয়ন দিয়েছে—এজন্য তিনি কৃতজ্ঞ। তিনি আরও বলেন, সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারলেই জিয়াউর রহমানের ভিশন এবং বেগম খালেদা জিয়ার লক্ষ্য বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। তারেক রহমান দীর্ঘদিন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে অত্যন্ত বিচক্ষণতার সঙ্গে সারাদেশ থেকে যোগ্য প্রার্থী নির্বাচন করেছেন।
জামায়াতে ইসলামের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “যে অদৃশ্য শক্তি দীর্ঘদিন দেশের রাজনীতিতে অভিশাপ হয়ে আছে, তারা হলো জামায়াতে ইসলাম। শহীদ জিয়াউর রহমান মানবিক কারণে তাদের আশ্রয় ও নির্বাচন করার সুযোগ দিলেও আজ তারা ইসলামের নাম ব্যবহার করে দেশের জনগণকে প্রতারিত করছে, বিশেষ করে মা-বোনদের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে বিভ্রান্ত করছে এবং নির্বাচনী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। মা-বোনদের কর্মসংস্থান, নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিএনপি সরকার সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে, অথচ জামায়াতে ইসলামের ষড়যন্ত্র সবসময়ই সক্রিয় ছিল এবং তারা কখনো সুষ্ঠু নির্বাচন চায় না।”
উন্নয়ন ও প্রতিশ্রুতির প্রসঙ্গে তিনি বলেন—তরুণদের ভোকেশনাল ট্রেনিং, যারা পড়াশোনা করতে পারেনি তাদের দক্ষতা উন্নয়ন, মা-বোনদের কর্মসংস্থান, কৃষকদের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা, শিক্ষিত যুবকদের চাকরি পাওয়ার আগ পর্যন্ত বেকার ভাতা প্রদান এবং বেনাপোল স্থলবন্দরকে ডিজিটালাইজড করে শার্শার যুবকদের জন্য নতুন কর্মসংস্থান তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হবে। তিনি বলেন, “জামাতের ষড়যন্ত্র থেকে আমাদের মা-বোনদের রক্ষা করতে হবে। তারেক রহমান মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য কাজ করছেন—আমাদের সেই পথেই চলতে হবে।”
উঠান বৈঠকে তিনি আরও আবেগভরে বলেন—“আমি শার্শার সন্তান। তাই আপনাদের থেকে দূরে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না। সারাটা জীবন আপনাদের সাথেই থাকব। জনপ্রতিনিধি না হয়েও বিগত দিনে আপনাদের পাশে থেকেছি, আপনাদের কর্মসংস্থান ও সন্তানদের ভবিষ্যৎ গঠনে কাজ করেছি। শার্শা থানার রাস্তাঘাটের উন্নয়ন থেকে শুরু করে বেনাপোলকে পৌরসভা করার উদ্যোগ—এসব কার্যক্রমে আমি আন্তরিকভাবে ভূমিকা রেখেছি। আপনাদের ভালোবাসা ও সমর্থনে যদি আমি এমপি নির্বাচিত হতে পারি, তবে বাংলাদেশের বুকে শার্শা থানাকে উন্নয়নের একটি রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করব। এই এলাকার মানুষের জীবনমান উন্নয়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার প্রসার—সবকিছুতেই আমি নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে কাজ করে যাব।”
সর্বশেষে তিনি বলেন, “শার্শার সন্তান হিসেবে আমার জীবন দিয়ে হলেও আমি আপনাদের সেবা করে যাব, এবং সেবায় যদি জীবন শেষ হয় তাতেও আমার কোনো কষ্ট নেই।”

